সম্পাদকীয়

শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ান

শীতকাল এসেছে। ভোরে এবং সন্ধ্যায় গা হিম করা বাতাস বয়ে যায়। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত যত গভীর হয় শীতের তীব্রতা ততই বাড়তে থাকে। ঠাণ্ডায় কুঁকড়ে যায় পথের ধারে থাকা পথশিশু এবং ছিন্নমূল মানুষজন। শীত থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র তাদের নেই। এই শীতের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু হয় অনেকের। রাত একটু গভীর হলেই জড়োসড়ো হয়ে ফুটপাতে শুয়ে থাকতে দেখা যায় অসংখ্য পথশিশু এবং ছিন্নমূল মানুষকে। কিন্তু বর্তমানে যে হাড় কাঁপানো শীত পড়ছে তা থেকে বাঁচার জন্য পর্যাপ্ত গরম কাপড় তাদের নেই। তবুও এই শীতের রাতে পথের ধারে বিছানা পেতে থাকতে হয় তাদের। যদিও এই তীব্র ঠাণ্ডা সহ্য করার মতো সামর্থ্য তাদের নেই।

ছিন্নমূল এই মানুষরা তাহলে বাঁচবে কী করে? তাদেরও তো বেঁচে থাকার অধিকার আছে। কিন্তু নেই বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় গরম কাপড়। কারো গায়ে হয়তো পুরনো একটি শীতের জামা। কারো গায়ে হয়তো একটি পাতলা কম্বল জড়ানো। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতের তীব্রতাও যেন বাড়তে থাকে। ছিন্নমূল মানুষরা কি সহ্য করতে পারে শীতের এমন তীব্রতা? সরকারের উচিত এসব ছিন্নমূল মানুষ এবং পথশিশুর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। শীতের সময় যেন তারা বেঁচে থাকতে পারে সেজন্য তাদের প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র প্রদান করা।

আবার গ্রামের অধিকাংশ মানুষ যারা নিম্নবিত্ত তাদের শীত নিবারণের জন্য প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র থাকে না। এই প্রচণ্ড শীতে বেঁচে থাকা তাদের জন্য যেন অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র আসলেও তা গ্রামের এসব গরিব মানুষ যথাযথভাবে পায় না। এসব শীতবস্ত্র বিতরণে প্রায় প্রতি বছরই অনিয়ম-দুর্নীতি লক্ষ্য যায়। যার ফলে গ্রামের নিম্নবিত্তের লোকরা পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের অভাবে ভোগে। জীর্ণশীর্ণ ঘরে হিম হাওয়া ঢোকে তাদের সেই হাওয়া শীতের তীব্রতাকে যেন আরো বাড়িয়ে দেয়। সরকারের উচিত যথাযথ তদারকির মাধ্যমে উপযুক্ত শীতবস্ত্রহীন লোকদের নিকট শীতবস্ত্র পৌঁছে দেয়া।

পথের ধারে শুয়ে থাকা মানুষরাও আমাদের মতোই শীতের তীব্রতা অনুভব করে। তারাও চায় বাঁচতে। তাই আসুন আমরা যারা সামর্থ্যবান আছি আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করি এসব মানুষের মাঝে উষ্ণতার পরশ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য। শীতের রাতে রাস্তায় বের হয়ে পথের ধারে কুঁজো হয়ে শুয়ে থাকা মানুষদের গায়ের ওপরে জড়িয়ে দিই একখানা কম্বল। যা হতে পারে তাদের এই শীতে বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল। আমরা সবাইকে না হলেও অন্তত আমার ঘরের পাশের শীতবস্ত্রহীন মানুষটিকে একটি শীতবস্ত্র দিয়ে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসি। আমরা প্রতিজ্ঞা করি, আমরাই ছড়িয়ে দেব উষ্ণতার ছোঁয়া।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension