বাংলাদেশের পথেমুক্তিযুদ্ধস্বাধীনতা
স্বাধীনতার পথে- ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১
১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের প্রতি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, পাকিস্তান সরকার যদি ধ্বংসকৃত ভারতের বিমানের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দান এবং হাইজ্যাকারদ্বয়কে ভারতের হাতে ফেরত না দেয় তবে সংঘর্ষমূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তিনি আরও বলেন, দেশ যখন সাধারণ নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তখন ভারতীয় জনসাধারণকে বিভক্ত করার উদ্দেশ্যে বিমান হাইজ্যাকের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
পাকিস্তান পিপলস্ পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচি বিমানবন্দরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, জাতি আজ যে শাসনতান্ত্রিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে তা থেকে উত্তরণের জন্য তার পার্টি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, বিগত ২৩ বছরকাল ধরেই শাসনতান্ত্রিক সঙ্কট বিদ্যমান রয়েছে। এ সঙ্কট থেকে উত্তরণের ফরমুলা উদ্ভাবন করে তার মাধ্যমে যাতে আমরা একটা কার্যকর ও স্থায়ী শাসনতন্ত্র পেতে পারি, সেদিকেই আমাদের সকল প্রচেষ্টা নিয়োজিত রয়েছে।
৬ দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র প্রণীত হলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবেন বলে পাকিস্তান পিপলস্ পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টোর বক্তব্য সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র লীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, ডাকসু সহসভাপতি আ. স. ম আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, দেশের বর্তমান সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে তার এই বিবৃতি কেবল দুঃখজনকই নয় বরং গণতন্ত্রের মূলনীতির পরিপন্থী এবং প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাবের শাসনতন্ত্র রচনার একটি গণভোট।
হায়দরাবাদের বিশিষ্ট হারি নেতা জামসাদ সাকী লাহোরে বলেন, দেশে এক শ্রেণীর আমলা এবং ফ্যাসিস্ট যুদ্ধ উন্মাদনা সৃস্টি করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধা সৃষ্টি করে চলছে। তিনি বলেন, জনগণ এই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি আরও বলেন, কাশ্মির, ইসলাম, পাকিস্তান বিপন্ন- এইসব সস্তা শ্লোগানে জনগণ আর বিভ্রান্ত হবে না।
পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সভাপতি খান আবদুল ওয়ালী খান বলেন, ভুট্টোর সঙ্গে তার আসন্ন বৈঠকে তিনি দেশের সংহতি এবং পাকিস্তানের সকল অঞ্চলের অধিকার এবং অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য শাসনতান্ত্রিক ফরমুলা উদ্ভাবনের ব্যাপারে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, তার দল এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সৌজন্যে।