
ডেমোক্র্যাটদের সামনে দুই পথ: জোহরান মামদানি বনাম অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার — কোন পথে এগোবে আমেরিকার ডেমোক্রেটিক পার্টি?
হোসনেআরা চৌধুরী | নিউইয়র্ক | নভেম্বর ৩, ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এখন ডেমোক্র্যাটদের সামনে এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ। একদিকে নিউইয়র্কের তরুণ প্রগতিশীল নেতা জোহরান মামদানি, অন্যদিকে ভার্জিনিয়ার সাবেক সিআইএ অফিসার ও মধ্যপন্থী প্রার্থী অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার— দুজনই দলকে ভিন্ন পথে পরিচালনার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
এই দুই প্রার্থীর দর্শন যেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির দুই মেরুর প্রতিনিধিত্ব করছে—একদিকে সমাজতান্ত্রিক ও জনকল্যাণমুখী রাজনীতি, অন্যদিকে বাস্তববাদী ও মধ্যপন্থী কৌশলনির্ভর রাজনীতি।
মামদানির পথ: জনগণের ব্যয়ের বাস্তব যুদ্ধ
উগান্ডা-জন্ম নেওয়া এই তরুণ রাজনীতিক বিশ্বাস করেন, “এ লড়াই শুধু নির্বাচনের নয়, ডেমোক্র্যাট পার্টির আত্মার লড়াই।”
তিনি নিউইয়র্কের ভোটারদের উদ্দেশে বলছেন—বাস, বাড়ি, খাবার ও জীবনযাত্রার মৌলিক ব্যয় কমানোই এখন রাজনীতির মূল কাজ।
তার প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে—
• ভাড়ার উপর নিয়ন্ত্রণ
• গণপরিবহনে সহায়তা
• উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের উপর বেশি কর
মামদানির সমর্থকরা মনে করেন, এই ধারণাগুলো জনগণের জীবনের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত এবং তাদের প্রতিদিনের বাস্তবতা থেকে উঠে এসেছে।
স্প্যানবার্গারের পথ: বাস্তবসম্মত প্রতিশ্রুতির রাজনীতি
অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার, সাবেক সিআইএ অফিসার ও মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাট, বলছেন—“আমরা বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিতে পারি, কিন্তু যা পালনযোগ্য নয় তা মানুষ বিশ্বাস করবে না।”
তিনি চান এমন এক দল, যারা মধ্যবিত্ত ও সাধারণ ভোটারদের বাস্তব সমস্যাগুলোকে অগ্রাধিকার দেবে।
তাঁর মতে, ডেমোক্র্যাটরা যদি কেবল বামধারার স্বপ্নে বিভোর থাকে, তবে গ্রামীণ ও মাঝারি আয়ের ভোটারদের কাছে দলের গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবে।
দলীয় দ্বন্দ্ব ও ভবিষ্যৎ প্রশ্ন
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অভ্যন্তরে এখন তীব্র বিতর্ক—
• দল কি মামদানির মতো সমাজতান্ত্রিক ধারায় যাবে?
• নাকি স্প্যানবার্গারের মতো বাস্তববাদী মধ্যপন্থা অনুসরণ করবে?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মামদানির জয় পার্টির ভবিষ্যৎ প্রগতিশীল মুখ হিসেবে নতুন তরঙ্গ সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে স্প্যানবার্গারের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে, দল এখনও বাস্তব ও মধ্যপন্থী ভোটারদের কাছ থেকে শক্তিশালী সমর্থন পেতে পারে।
পরিশেষে
এই নির্বাচনের ফলাফল শুধু এক শহর বা রাজ্যের সীমাবদ্ধ নয়; এটি নির্ধারণ করবে ডেমোক্র্যাট পার্টির ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা।
বামপন্থার আবেগ ও মধ্যপন্থার বাস্তবতার এই সংঘাতই হয়তো ২০২৬ সালের জাতীয় রাজনীতির ভিত্তি গড়ে দেবে।
সূত্র: CNN, Reuters, The Washington Post, প্রতিবেদন সংকলন: হোসনেআরা চৌধুরী



