
দুই মাসে একদিনও নির্মল বাতাস ছিলো না রাজধানীতে
গত দুই মাসে একদিনও নির্মল বাতাস ছিলো না রাজধানী ঢাকায়। আর গত ৯ বছরে মাত্র ৫০ দিন বিশুদ্ধ বাতাস মিলেছে নগরবাসীর জীবনে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বায়ু দূষণ বেড়েই চলেছে। পরোক্ষভাবে বায়ু দূষণ নীরব ঘাতক হিসেবে ক্যান্সার, কিডনি রোগসহ মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষণরোধ করতে না পারলে বায়ু দূষণে মানুষের মৃত্যু বাড়বে। ঘরে বাইরে বায়ু দূষণ এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই অস্বাস্থ্যকর বায়ুর শীর্ষ তালিকায় থাকছে রাজধানী।
পাঁচ থেকে ছয়টি উৎস বায়ু দূষণের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গাড়ির কালো ধোয়া, রাস্তার ধুলা, উন্মুক্ত স্থানে নির্মাণ সামগ্রী রাখা, অপরিকল্পিত উন্নয়ন, লাকড়ির চুলা থেকে নির্গত ধোয়া, আর দীর্ঘ যানজটে গাড়ি থেকে অতিরিক্ত নির্গত ধোয়া বাতাসকে সবচেয়ে বেশি দূষণ করছে। নগরবাসী বলছে, ধুলার কারণে রাস্তায় চলাচলই কঠিন হয়ে পড়ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ডিন আবদুস সালাম জানান, দূষিত বাতাসে মিলছে সালফার, ক্যাডমিয়াম, নিকেল, আর্সেনিক, ম্যাংগানিজ, কপারসহ ক্যান্সার সৃষ্টি করে এমন ক্ষতিকর উপাদান। বাতাসে এসব ধাতব উপস্থিতি এখন দ্বিগুণের বেশি। সূক্ষ্ম, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে রক্তে মিশে যাচ্ছে। যা ক্যান্সার, কিডনির মত জটিল রোগের সৃষ্টি করছে। এমনকি মায়ের গর্ভে থাকা বাচ্চারও ক্ষতি করছে।
বায়ু ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এতো যখন সংকট তখন শুধু পানি ছিটিয়ে দূষণ রোধ করার কাজ সারছে সিটি কর্পোরেশন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ৯ বছরে মাত্র ৫০ দিন নির্মল বাতাস মিলেছে। বাকি সময় অস্বাস্থ্যকর আর দুর্যোগ পূর্ণ বায়ু সেবন করতে হয়েছে রাজধানীসহ দেশের মানুষকে। বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এমনকি প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যাপ্ত সক্ষমতাও নেই। তাই দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে জানান বিশেষজ্ঞরা।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বায়ু দূষণের কারণে দেশে বছরে লাখেরও বেশি মানুষ মৃত্যু হয়। বায়ু দূষণ রোধকরা গেলে এই মৃত্যুহারও কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।



