
ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের পাকিস্তানে উষ্ণ অভ্যর্থনা
রাস্তাঘাট পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে, উড়ছে ব্যানার। ভারতীয় শিখ তীর্থযাত্রীদের বুধবার তাদের ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের ৫৬৬ বছর আগে জন্মগ্রহণ করা সেই পাকিস্তানি শহরে স্বাগত জানানো হয়েছে। শহরটি এখন ভক্তি ও আশায় ভরে উঠেছে।
পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে মে মাসের মারাত্মক সংঘর্ষের পর স্থল সীমান্ত বন্ধ হয়ে গেলেও, এই প্রথম এত বড় আকারে তীর্থযাত্রা প্রতিবেশী ভারত থেকে পাকিস্তানে এসেছে।
৪৬ বছর বয়সী ইন্দরজিৎ কৌর এএফপিকে বলেন, ‘আমরা চিন্তিত ছিলাম যে পাকিস্তান অংশে পরিবেশ কেমন হবে এবং লোকেরা আমাদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করবে। কিন্তু এটি ছিল চমৎকার। আমরা উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছি।’
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই শহরে শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নানকানা সাহিবের মাজারে প্রায় ৪০ হাজার উপাসক সমবেত হয়েছেন।
মাজার চত্বরের ভেতরে গাঁদা ফুল দিয়ে দেয়াল সাজানো হয়েছে এবং ধর্মীয় বন্দনার সুরে বাতাস ভরে উঠেছে। পুরুষ ও মহিলারা আবেগের সঙ্গে প্রার্থনা করছেন, কেউ কেউ একটি পুকুরে আচারিক স্নান করছেন।
ভারত থেকে আসা ৬৬ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার হরজিন্দর পাল সিং বলেন, ‘এখানে কোনো ভয় নেই। দিল্লিতে আমরা গুরু নানকের জন্মদিন যেভাবে উদযাপন করি, ঠিক একই আবেগ নিয়ে এখানেও তা উদযাপন করা হচ্ছে।
’
তবে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে উত্তেজনা এখনো চলমান।
মে মাসের সেই লড়াই—যা ১৯৯৯ সালের পর দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতা ছিল—তাতে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং আর্টিলারি বিনিময়ে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।
তবু মাজারের ভেতরে উভয় পক্ষের শিখরা একে অপরকে উষ্ণভাবে আলিঙ্গন করেছেন, ছোট উপহার বিনিময় করেছেন এবং একসঙ্গে সেলফি তুলেছেন।
প্রধান ফটকে, তরুণ মুসলিম ও হিন্দুরা ঢোলের তালে তালে শিখ তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে নেচেছেন।
হরজিন্দর বলেন, ‘শুধুমাত্র একটি সীমান্ত আমাদের আলাদা করেছে, কিন্তু আমাদের হৃদয়ে কোনো পার্থক্য নেই।



