
মামদানি-কুমো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ধর্মীয় ভোট ব্লকের নতুন সমীকরণ
নিউ ইয়র্ক | হোসনেআরা চৌধুরী
নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে শহরের প্রভাবশালী ইহুদি ধর্মীয় গোষ্ঠী Satmar Hasidic সম্প্রদায়ে দেখা দিয়েছে অভ্যন্তরীণ বিভাজন। সম্প্রদায়ের এক অংশ প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে (Andrew Cuomo) সমর্থন জানিয়েছে, অন্যদিকে এক রাব্বির একক ঘোষণায় প্রগতিশীল প্রার্থী জোহরান মামদানি (Zohran Mamdani)-কে সমর্থন দেওয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত
গত রবিবার Satmar-এর এক শাখার রাব্বি মোশে ইন্ডিগ (Moshe Indig) হঠাৎই প্রকাশ্যে মামদানির পক্ষে সমর্থন ঘোষণা করেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব জানায়, এই ঘোষণা ছিল “সম্পূর্ণ অননুমোদিত” এবং এটি গোষ্ঠীর অফিসিয়াল অবস্থান নয়।
এরপরই Satmar Ahronim শাখার তিন প্রভাবশালী নেতা — চেস্কেল বারকোভিটজ, অব্রাম ব্রাক এবং শুলেম ইয়িৎসখ জ্যাকবোভিটজ — এক যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা করেন, তাদের গোষ্ঠী অ্যান্ড্রু কুমোকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিচ্ছে।
তারা বলেন, রাব্বি ইন্ডিগের ঘোষণায় তারা “অবাক” হয়েছেন, কারণ Satmar বোর্ডের কেউই এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেননি।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
Satmar Hasidic গোষ্ঠী নিউ ইয়র্কের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় ভোট ব্লক, বিশেষ করে ব্রুকলিন এলাকায় তাদের প্রভাব ব্যাপক। এই সম্প্রদায় সাধারণত সংগঠিতভাবে ভোট দিয়ে থাকে, যা স্থানীয় রাজনীতিতে নির্ণায়ক ভূমিকা রাখে।
জোহরান মামদানি, একজন প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও বর্তমান আইনপ্রণেতা, ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে কিছু ধর্মীয় মহলে বিতর্কিত হয়ে উঠেছেন।
অন্যদিকে, অ্যান্ড্রু কুমো তাঁর দীর্ঘ প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও “নিউ ইয়র্কের স্থিতিশীল নেতৃত্ব”-এর বার্তাকে সামনে রেখে প্রচার চালাচ্ছেন।
সমর্থন ঘিরে প্রতিক্রিয়া
মামদানি রাব্বি ইন্ডিগের ঘোষণাকে সামাজিক মাধ্যমে স্বাগত জানান, কিন্তু Satmar নেতৃত্বের পাল্টা বিবৃতি তাঁর প্রচারে কিছুটা অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে।
কুমো শিবির এটিকে “গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন” বলে আখ্যা দিয়েছে, কারণ এটি শহরের অন্যতম প্রভাবশালী ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আনুষ্ঠানিক সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বিভাজন কেবল একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর মতবিরোধ নয় — বরং নিউ ইয়র্ক সিটির নির্বাচনে ধর্মীয় ভোট ব্লকের নতুন সমীকরণ গঠন করছে।
নির্বাচনের একদিন আগে এই সমর্থন পরিবর্তন ভোটের ফলাফলেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।



