
সুদানে নতুন ভয়াবহতা, এল-ফাশারে হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ
সুদানে গণহত্যার কবলে পড়া শহরটিতে এখনও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। দারফুরের এল-ফাশার শহরে আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) হাত থেকে দারফুর অঞ্চলে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত ও নির্যাতিত বেসামরিক নাগরিকরা এমনই ভয়াবহ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
গত দুই বছর ধরে চলমান ওই সংঘাতে সুদানজুড়ে মারা গেছেন দেড় লাখের বেশি মানুষ। দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশে। প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। খবর আলজাজিরার
আরএসএফের হাতে শহরটির পতন হয়। এর আগে উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশার ছিল সুদানের সেনাবাহিনীর শেষ শক্ত ঘাঁটি। তার পর থেকে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বেসামরিক নাগরিকদের নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছে। কারণ গণহত্যা, ধর্ষণ এবং অন্যান্য নির্যাতনের বিবরণ ক্রমাগত প্রকাশিত হচ্ছে।
আলখির ইসমাইল নামে এক সুদানি তরুণ প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে তাওইলা শহরে পালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, গত রোববার এল-ফাশার থেকে তিনিসহ ৩০০ জনের একটি দল পালানোর চেষ্টা করার সময় আরএসএফ যোদ্ধারা তাদের থামিয়ে দেন।
ইসমাইল বলেন, খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে এক যুবক ছিল। সে তাদের বলেছিল, ওকে হত্যা করো না। এর পর তারা বাকি লোকদের, আমার সঙ্গে থাকা যুবকদের এবং আমার বন্ধুদের হত্যা করে।
তাহানি হাসান নামের এক নারী বলেন, ‘হঠাৎ করেই তারা (যোদ্ধারা) এসে হাজির হলো। তিন যুবক হাজির হলো, ভিন্ন বয়সী। তারা বাতাসে গুলি করে বলল, থামো, থামো। তাদের পরনে ছিল আরএসএফের পোশাক। এমনকি একজন নারী হিসেবে আমাকেও তল্লাশি করে।
নাতি-নাতনিদের সঙ্গে পালিয়ে আসা ফাতিমা আবদুল রহিম জানান, তাওইলা পৌঁছানোর জন্য তিনি পাঁচ দিন ‘নির্মম পরিস্থিতিতে’ হেঁটেছেন। আমরা এখানে আসার পর জানতে পারি, আমাদের পেছনে আসা দলের মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছে।
মা-বাবার সামনে মেরে ফেলা হয়েছে সন্তানদের
জানা গেছে, আরএসএফের যোদ্ধারা মা-বাবার কাছ থেকে সন্তানদের ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করেছে। অনেককে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এসব বাবা-মা জানেন না তাদের সন্তান বেঁচে আছে, নাকি মারা গেছে। জাহরা নামে এক মা গত পরশু এল-ফাশার থেকে পালিয়ে নিকটস্থ তাওইলা শহরে এসেছেন। তাঁর ছেলেকেও নিয়ে গেছে আরএসএফ। তিনি বলেছেন, আমি জানি না আমার ছেলে মোহাম্মদ বেঁচে আছে, নাকি মরে গেছে।



