খেলা

শেষ হলো ১৫.৪ বিলিয়ন ডলারের গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ

শেষ হলো মহা কর্মযজ্ঞ। ৫ বছর ধরে বিশাল আয়োজন। বাস্তবায়ন হলো মাত্র ১৬ দিনে। জাপানের রাজধানী টোকিওতে বসেছিল ১১ হাজারেরও বেশি অ্যাথলেটের মিলনমেলা। সঙ্গে ছিল আরো কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারি। আয়োজক, সম্প্রচারক, স্বেচ্ছাসেবক থেকে শুরু করে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের কর্মযজ্ঞ।

১৬দিনের বিশাল এই আয়োজন শেষে পর্দা নামলো আজ। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো টোকিও অলিম্পিক গেমস। বিদায়ী সম্ভাষণে টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে মাস্ক পরে অ্যাথলেটরা মার্চপাস্টে অংশ নিলেন। যে মশালটি ২৩ জুলাই জ্বালানো হলো, সেই মশালটি ১৬দিন জ্বালানোর পর অবশেষে নিভিয়ে দেয়া হলো। তিন বছর পর সেই মশালটিই জ্বলে উঠবে আবার প্যারিসে, ফ্রান্সের রাজধানীতে।

এবারের টোকিও অলিম্পিক গেমস ছিল সত্যিই স্পেশাল। করোনা মহামারির কারণে একটি বছর পিছিয়ে দেয়া হলো। ২০২০ সালের পরিবর্তে নিয়ে আসা হয় ২০২১ সালে। এবারও গেমস আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়ে ছিল তুমুল সংশয়। কারণ জাপানে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল করোনা সংক্রমণ।

যে কারণে টোকিও অলিম্পিক গেমস আয়োজক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছিল জরুরি অবস্থা জারি থাকলেও গেমস আয়োজন করা হবে। অবশেষে সব বাধা-বিপত্তি দুরে ঠেলে দিয়ে জ্বালানো হলো টোকিও গেমসের মশাল। জাপানের গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী টেনিস খেলোয়াড় নাওমি ওসাকার হাতে জ্বলে ওঠে গেমসের মশাল। জাপানের সম্রাট নারুহিতো অলিম্পিকের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

২৩ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট, মোট ১৬ দিনে ৫০টি ডিসিপ্লিনে মোট ৩৩৯টি স্বর্ণের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। ২০৬টি দেশের মোট ১১ হাজার ৬৫৬ জন অ্যাথলেট অংশগ্রহণ করেন এবারের অলিম্পিকে। করোনার কারণে ছিল কড়া বিধি-নিষেধ। যে কারণে অলিম্পিক ভিলেজে নানা সমালোচনারও শিকার হতে হয় আয়োজকদের।

গেমস চলাকালীন তবুও সংক্রমণের কমতি ছিল না। উল্লেখযোগ্যসংখ্যাক অ্যাথলেট করোনা সংক্রমণের শিকার হন। তবুও সংক্রমণের ভয়াবহতা ঠেকাতে দর্শকহীন স্টেডিয়ামেই আয়োজন করা গেমসের বিভিন্ন ইভেন্টের খেলা।

সমাপণী অনুষ্ঠান শেষ হতেই সাদা এবং সোনালী রঙয়ের আতশবাজিতে ভরে ওঠে টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামের চারপাশ। দর্শকহীন স্টেডিয়ামে খেলা আয়োজন করার কারণেই এই রঙকে বেছে নেয়া হয় আতশবাজির জন্য।

অ্যাথলেটরা নিজেদের দেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে বিদায়ী মার্চে অংশগ্রহণ করে। যদিও অনেক বিখ্যাত অ্যাথলেট এরই মধ্যে টোকিও থেকে বিদায় নিয়ে নিজ নিজ দেশে চলে গেছেন। এমনকি কোনো কোনো দেশের সব অ্যাথলেটই বিদায় নিয়েছেন। গেমসের নিয়ম অনুযায়ী কোনো অ্যাথলেটের ইভেন্ট শেষ হয়ে গেলে তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিজ নিজ দেশের বিমান ধরতে হবে।

টোকিও অলিম্পিকের সমাপনি অনুষ্ঠানে নানাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে জাপানের সংস্কৃতি, লোকাচার, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উত্থানকে। একই সঙ্গে দেখানো হয়েছে কিভাবে দেশটি মারাত্মক সব ভূমিকম্প, সুনামি এবং ২০১১ সালে ঘটে যাওয়া পারমানবিক বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension