প্রধান খবরমঞ্চমুক্তিযুদ্ধ
ড. কাজী মিসবাহুন নাহারকে থিয়েটারের সংবর্ধনা, সঙ্গে ‘দ্রৌপদী পরম্পরা’
গতকাল ২৯ মার্চ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নাট্যদল ‘থিয়েটার’ তাদের প্রাক্তন সভাপতি ড. কাজী মিসবাহুন নাহারের স্বাধীনতা পদক পাওয়া উপলক্ষে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল।
এ বছর যাঁরা স্বাধীনতা পদকে হয়েছেন দেশের ১৩জন বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁদের মধ্যে নারী ৩জন। কিন্তু স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্যে পেয়েছেন একজনই। তিনি ড. কাজী মিসবাহুন নাহার। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্যে সরকার তাঁকে এই সর্বোচ্চ বেসামরিক এই সন্মানে ভূষিত করেছে। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন।
কিন্তু ড. কাজী মিসবাহুন নাহার কেবলই একজন চিকিৎসক নন। তিনি একজন সংস্কৃতি কর্মীও বটে। ‘৬৯-এর আন্দোলনের উত্তাল সময়টিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে সৈয়দ হাসান ইমাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’ মঞ্চায়ন করেছিলেন। বাংলা একাডমি প্রাঙ্গণে মঞ্চায়িত সে নাটকের ‘নন্দিনী’ চরিত্রটিকে রূপদান করেছিলেন ড. কাজী মিসবাহুন নাহার। তারপর সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষে আবারও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়লেন। হয়ে পড়লেন একজন থিয়েটারের কর্মী। নাট্যজন। হয়েছিলেন থিয়েটারের সভাপতি।
‘৭১-এ দিতে নিজের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে বাড়ি ছাড়বার সিদ্ধান্ত নেন ড. কাজী মিসবাহুন নাহার। সেকথা জানিয়েছিলেন মা বাবাকে। বাবা প্রখ্যাত সাংবাদিক কাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথমে রাজি হন নি মেয়েকে যুদ্ধে যেতে দিতে। কিন্তু মা সমাজকর্মী কাজী আজিজা ইদ্রিস মেয়েকে সমর্থন করলেন। বাবাকেও রাজি করালেন। তারপর কাজী মিসবাহুন নাহারের সার্টিফিকেটগুলো হাতে তুলে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে অনুমতি দিয়েছিলেন।
ড. কাজী মিসবাহুন নাহার মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার পর অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় থিয়েটারের ওই গুণীজন সংবর্ধনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. সারওয়ার আলী, নাট্যজন ম. হামিদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ড. কাজী মিসবাহুন নাহারের বোন কাজী মদিনা এবং পুত্রবধু মেহনাজ পারভীন বনি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন থিয়েটার সভাপতি ড. নিলুফার বানু।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে থিয়েটার প্রবীর দত্ত রচিত ও নির্দেশিত তাদের ৪০তম প্রযোজনা ‘দ্রৌপদী পরম্পরা’ নাটকটির ১৯তম মঞ্চায়ন পরিবেশন করে।
মুখা