স্বাস্থ্য

ঘুমের অভাবে বাড়তে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি!

শরীর সুস্থ রাখার অন্যতম ওষুধ হল ঘুম। পর্যাপ্ত ঘুম অনেক শারীরিক সমস্যার অবসান ঘটায়। রোগ প্রতিরোধ শক্তিও মজবুত হয়ে ওঠে। তবে এখনকার এই ব্যস্ততাময় জীবনে নিশ্চিন্তে ঘুমানোর অবকাশ প্রায় নেই বললেই চলে। কাজের বিপুল চাপ, জীবন কেন্দ্রিক বিভিন্ন সমস্যা, অবসাদ, মানসিক উদ্বেগ সব মিলিয়ে মানুষের ঘুমের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে ক্রমশ। ঘুমের অভাবে দীর্ঘ মেয়াদী নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম অনেক শারীরিক সমস্যার অবসান ঘটায়। প্রাথমিক ভাবে কোনো সমস্যা দেখা না দিলেও পরবর্তীকালে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

ঘুমের অভাবে কী কী শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে?

১. স্থূলতা
শরীরচর্চা না করা, খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা ওজন বৃদ্ধির পিছনে এই কারণগুলিকে ধরা হত। গবেষণা বলছে, ঘুমের ঘাটতি থাকলেও বাড়তে পারে ওজন। শুধু তা-ই নয়, কোনো মানুষের স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুমের।

২. হৃদরোগের ঝুঁকি
চিকিৎসকদের মতে উচ্চরক্তচাপ হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। তবে আজকালের এই নিদ্রাবিহীন জীবনযাপনও বাড়াতে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি। ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশন’-এর করা গবেষণা তা-ই বলছে।

৩. মানসিক অবসাদ বাড়িয়ে তোলে
ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যোগসূত্র নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা হয়ে আসছে। চিকিৎসকরা নিশ্চিত করে বলেছেন পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে বিঘ্নিত হতে পারে মানসিক স্বাস্থ্য। অনেক দিন ধরে ঘুমের ঘাটতি কারণে গ্রাস করতে পারে মানসিক অবসাদ।

৪. প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়
প্রত্যেকের শরীরে একটি স্বতন্ত্র ক্ষমতা থাকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার। যেকোনো রোগের প্রাথমিক ঝড় শরীর নিজেই সামাল দেয়। সেই প্রতিরোধ শক্তি হ্রাস পায় যখন শরীরে ঘুমের ঘাটতি ঘটে। দিনের পর দিন কম ঘুমানোর প্রভাব পড়ে শরীরের অন্দরে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা হারাতে থাকে শরীর।

৫. প্রদাহজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যার বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। ‘ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ট্রাস্টে়ড’-এর একটি গবেষণা বলছে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে বদহজম, অম্বল, বুক জ্বালার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘুমের পরিমাণের উপর বিপাক ক্রিয়ার ভালমন্দ নির্ভর করে। ঘুম কম হলে স্বাভাবিক ভাবেই বিপাকজনিত এই ধরনের সমস্যা দেখা যায়।

কোন বয়সের মানুষের কতটুকু ঘুম প্রয়োজন?
১. নবজাতক: ১৭-১৮ ঘণ্টা
২. ৪ থেকে ১২ মাস:১২-১৬ ঘণ্টা
৩. ৩ থেকে ৫ বছর: ১০-১৩ ঘণ্টা
৪. ৬ থেকে ১২ বছর: ৯-১২ ঘণ্টা
৫. ১৩ থেকে ১৮ বছর: ৮-১০ ঘণ্টা
৬. ১৮ থেকে ৬০ বছর: ৭ ঘণ্টা
৭. ৬১ থেকে ৬৪ বছর: ৭-৯ ঘণ্টা
৮. ৬৫ থেকে সকলে: ৭-৮ ঘণ্টা

সুত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension