অর্থনীতিপ্রধান খবরবাংলাদেশ

বাজেট ২০২৫-২৬: স্বাস্থ্যসেবায় কমছে বড় অঙ্কের বরাদ্দ

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় অঙ্কের বরাদ্দ কমছে স্বাস্থ্যসেবায়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এ বিভাগের চলমান ১৪টি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের চার হাজার ৫১০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে এক হাজার ১০৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা খরচের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ১৫৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। এ হিসেবে বরাদ্দ কমছে পাঁচ হাজার ৫৩৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এছাড়া সংশোধিত এডিপিতে (আরএডিপি) বরাদ্দ আছে পাঁচ হাজার ৬৭৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এই তুলনায় কমবে ৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। অনুমোদনহীন ২৭টি নতুন প্রকল্প যুক্ত করা হবে। ১৫ এপ্রিল স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে এ প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো যুক্তিতেই স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমানো উচিত নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ও স্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন রোববার যুগান্তরকে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় সবসময় যে যুক্তি দেখায় সেটি ঠিক নয়। কেননা বরাদ্দ কমানোর ক্ষেত্রে বলা হয়, যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল সেটি তো খরচ করতে পারে না। তাহলে নতুন করে বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়ে লাভ কী। কিন্তু এখানে ব্যয়ের পুনর্বিন্যাস করাটা জরুরি। সেই সঙ্গে কেন বরাদ্দ দেওয়া অর্থ খরচ করতে পারে না সেটি খুঁজে বের করতে হবে। বরাদ্দ বাড়িয়েও এ কাজটা করা যায়। সমস্যা যদি সমাধান করা যায় তাহলে বেশি বরাদ্দ খরচ হতে কোনো বাধা থাকার কথা নয়।

ড. জাহিদ আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাতের পুষ্টিসংক্রান্ত অনেক কর্মসূচি রয়েছে। যেমন দরিদ্র মা ও শিশুদের জন্য বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে নগদ অর্থ দেওয়া হয়। এতে শিশুর বিকাশে যেমন সহায়ক হয় তেমনি মা ও তার পরিবারের ক্ষেত্রেও এটা বড় সাপোর্ট। সেগুলোতে বরাদ্দ কমানোর কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকলে উন্নত চিকিৎসা যেমন নিশ্চিত হয়, তেমনি মানুষের চিকিৎসা ব্যয়ও কমে আসে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জানা যায়, আগামী অর্থবছরে এডিপিতে মোট ২৭টি অনুমোদনহীন নতুন প্রকল্প যুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বৈদেশিক সহায়তাপ্রাপ্তির সুবিধার্থে একটিসহ ২৪টি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে একটি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের একটি এবং বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের একটি প্রকল্প আছে।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, আগামী অর্থবছরের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে এর মধ্যে চলমান ১৪টি প্রকল্পের বেশ কয়েকটিতেই বরাদ্দ কমানো হবে। এগুলোর মধ্যে এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড মানিকগঞ্জে প্লান্ট স্থাপন প্রকল্পে সংশোাধিত এডিপিতে বরাদ্দ রয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে ৮০০ কোটি টাকা কমিয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য ২০০ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জামালপুর নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পে ৩৫০ কোটি টাকা থেকে বরাদ্দ কমিয়ে ২০০ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্প থেকে ২০৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৩৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension