ভারতযুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে বিজেপি সংশ্লিষ্ট ডেমোক্র্যাটরা নতুন প্রশাসনে জায়গা পান নি

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে ২০ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট স্থান পেয়েছেন। কিন্তু বিজেপি বা আরএসএস-সংশ্লিষ্টতা থাকায় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট নতুন প্রশাসনে জায়গা পান নি।

বাইডেন-শিবিরের প্রচারে এসব ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতা বেশ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা জায়গা না পাওয়ায় বেশি আলোচনা হচ্ছে। খবর ভারতের দ্য ট্রিবিউন ও আনন্দবাজার পত্রিকা এবং রয়টার্স।

ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয়-আমেরিকান সংগঠনগুলোর চাপে বাইডেন-হ্যারিসের দল আরএসএস-বিজেপি ঘেঁষা ব্যক্তিদের প্রশাসনের বাইরে রেখেছে। মূলত, হিন্দুত্ববিরোধী সংগঠনগুলোর চাপে আরএসএস-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সরকারে রাখার বিষয়ে সতর্ক ডেমোক্র্যাটরা।

আর এ সংগঠনগুলোর অব্যাহত প্রচারে হিন্দুত্ব-সমর্থক কংগ্রেস প্রার্থী প্রেস্টন কুলকার্নি নির্বাচনে পরাজিত হন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক গুরুত্ব হারান আরেক কংগ্রেস সদস্য তুলসি গাবার্ড।

সোনাল শাহ ও অমিত জানির আরএসএস সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রায় একডজন ইন্ডিয়ান-আমেরিকান সংগঠন গড়ে ওঠায় নতুন ডেমোক্র্যাট সরকারে তাদের রাখা হয়নি।

বাইডেনের দলে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক উজরা জেয়া। ২০১৪ সালে নিউইয়র্কে গৃহকর্মীর ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়ের গ্রেফতারের ঘটনায় জেয়ার ভূমিকা ছিল। বাইডেন প্রশাসনে স্থান পেয়েছেন সামিরা ফাজিলি।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত সামিরা যুক্তরাষ্ট্রে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, নাগরিকপঞ্জি বা কাশ্মীর লকডাউন ইস্যুতেও প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন তিনি।

সাবেক বারাক ওবামা প্রশাসনে থাকা সোনাল শাহ এবার জায়গা পাননি। বাইডেনের ‘ইউনিটি টাস্কফোর্স’ দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার বাবা আরএসএসের অঙ্গসংগঠন ‘একাল বিদ্যালয়’-এর প্রতিষ্ঠাতা। পাশাপাশি, তিনি ‘ওভারসিস ফ্রেন্ডস অব বিজেপি-ইউএসএ’-এর প্রধান।

সোনাল শাহ নিজে আবার এ সংগঠনটির জন্য অনুদান সংগ্রহ করেছিলেন। আরএসএস-বিজেপি সংশ্লিষ্টতার জেরে বাইডেনের প্রশাসনে স্থান না পাওয়া অপর উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হচ্ছেন অমিত জানি। তিনি বাইডেন প্রচার-শিবিরের ‘মুসলিম আউটরিচ’ কর্মসূচির সমন্বয়ক ছিলেন। কিন্তু পরে জানা যায় তিনি তার পরিবারের সঙ্গে বিজেপি ও মোদির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপি-আরএসএস সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন কাউকে যেন প্রশাসনে রাখা না হয়, সেজন্য ১৯টি ভারতীয়-আমেরিকান সংগঠন বাইডেনের কাছে চিঠি লিখেছে।

এতে উল্লেখ করা হয়-উগ্রডানপন্থি হিন্দু সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন অনেকে ডেমোক্রেটিক দলের সদস্য। তাই এক্ষেত্রে তাকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়।

বাইডেনের অভিবাসন নীতিকে স্বাগত জানাল গুগল ও অ্যাপল : প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নতুন অভিবাসন নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, অ্যাপলের সিইও টিম কুক এবং প্রযুক্তি খাতের অন্য কর্মকর্তারা। তারা বলেন, এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে। নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করবে।

বিদেশের বহু দক্ষ কর্মী যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার সুযোগ পাবে। কংগ্রেসে বাইডেনের পাঠানো অভিবাসন বিলে বলা হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রে নথিপত্র ছাড়াই যে হাজার হাজার মানুষ বাস করেন, তাদের নাগরিকত্ব ও গ্রিন কার্ড পাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট-২০২১ নামে বিল পাশ হলে অভিবাসন পদ্ধতির আধুনিকীকরণ হবে।

এখন প্রতি দেশ থেকে কতজনকে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি করার জন্য গ্রিন কার্ড দেওয়া হবে, তার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার বিধি তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে ভারতের কয়েক হাজার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী উপকৃত হবেন।

অ্যাপলের টিম কুক বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেভাবে অভিবাসন নীতির সংস্কার করতে চাইছেন, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচারের ধারণার প্রতি তার দায়বদ্ধতা প্রকাশ পেয়েছে। বুধবার বিবৃতিতে টিম কুক বলেন, প্রেসিডেন্ট যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্র আরও শক্তিশালী হবে।❐

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension