ইরান নিয়ে বিপরীত অবস্থানে ট্রাম্প-বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যখন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে ইসরাইলকে উস্কানি দিচ্ছেন, তখন বর্তমান প্রেসিডেন্ট সতর্ক করেছেন ইসরাইলকে।
গাজা, লেবানন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, সিরিয়া পরিস্থিতি, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের উত্তেজনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলের হামলা চালানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। ফলে যুদ্ধের এই দামামায় পরিস্থিতি কোনদিকে যায় তা সময়ই বলে দেবে।
কিন্তু শুক্রবার ইসরাইলকে হুঁশিয়ার করেছেন জো বাইডেন। তিনি ইরানের তেল বিষয়ক স্থাপনায় হামলা চালানোর বিরুদ্ধে পরামর্শ দিয়েছেন ইসরাইলকে। বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রতিরোধে তিনি বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
আগামী ৫ই নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাতে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বর্তমানে নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত। এর আগে তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তর করে জেরুজালেমে নিয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে তিনি জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর কার্যত স্বীকৃতি দেন। এ নিয়ে ফিলিস্তিন ও মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তিনি দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান প্রচেষ্টায় না গিয়ে সরাসরি ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে তাদেরকে উজ্জীবিত করেছেন। এর ফলে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
সর্বশেষ তারই ধারাবাহিকতায় কারো কাছে কোনো জবাবদিহিতা ছাড়াই গাজায় নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। সেখানে কমপক্ষে ৪১ হাজার মানুষকে তারা হত্যা করেছে। এর বেশির ভাগই শিশু ও নারী। এখানেই থেমে থাকেনি তারা।
সম্প্রতি লেবাননেও একই ধারায় হামলা শুরু করেছে। এরই মধ্যে সেখানে তারা হত্যা করেছে কমপক্ষে দুই হাজার মানুষকে। এর মধ্যে আছেন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ। এর ফলে ইরান তীব্র ক্ষুব্ধ। তাদের একজন কমান্ডারও ওই হামলায় মারা গেছেন। ফলে ইরান প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয় এবং ইসরাইলে প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
এর জবাব কঠোর হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাকে উস্কানি দিচ্ছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলছেন, ইসরাইলের উচিত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো। ওদিকে হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং রুমে বিস্ময়করভাবে প্রথম উপস্থিত হয়ে বাইডেন বলেন, পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে সে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে স্মরণ রাখা উচিত যে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন ইসরাইলের। যদি আমি তাদের অবস্থানে হতাম তাহলে তেলক্ষেত্রগুলোতে হামলা চালানোর বিকল্প নিয়ে ভাবতাম।
তিনি আরও বলেন, কিভাবে, কোন উপায়ে প্রতিশোধ নেবে সে বিষয়ে ইসরাইলিরা এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। মধ্যপ্রাচ্যের এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার তেলের মূল্য লাফিয়ে বেড়েছে। যদি তেলের মূল্য বৃদ্ধি স্থায়ী হয় তাহলে তা ডেমোক্রেট প্রার্থী কমালা হ্যারিসের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।