নিউ ইয়র্কপ্রধান খবরযুক্তরাষ্ট্র

ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকায় চাপের মুখে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট

নিউইয়র্ক ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ দমন করে নতুন করে চাপের মুখে পড়েছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকায় তার প্রশাসনকে তীব্র ভাষায় তিরস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদারকি প্যানেল।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে বসায় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে নিউইয়র্ক পুলিশকে তলব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত মিনৌচ শফিক। এতে অনেক শিক্ষার্থী, ফ্যাকাল্টি এবং বাইরের পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে প্রতিবাদের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট একটি প্রস্তাবনা প্রকাশ করে বলে, পুলিশ ডেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ বন্ধ করে শফিকের প্রশাসন একাডেমিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং শিক্ষার্থী ও ফ্যাকাল্টি সদস্যদের গোপনীয়তা এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অধিকারকে উপেক্ষা করেছে। সিনেট জানায়, ‘এই সিদ্ধান্তটি যৌথ শাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার প্রতি প্রশাসনের শ্রদ্ধা সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।’

সিনেটের বেশিরভাগ সদস্যই ফ্যাকাল্টি, অন্যান্য কর্মচারী ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। প্রস্তাবনায় তারা শফিকের নাম উল্লেখ করেনি এবং নিন্দার কড়া ভাষা এড়িয়ে গেছে। বিক্ষোভ মোকাবিলায় সিনেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যে ‘সংশোধনমূলক পদক্ষেপ’ নিতে বলেছে তা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়েছে।

এই প্রস্তাবনার বিষয়ে সিনেটের সদস্য শফিকের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। গতকাল শুক্রবারের বৈঠকে অংশ নেননি তিনি এবং এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিদের সমর্থন ধরে রেখেছেন। এই ট্রাস্টিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নিয়োগ বা বরখাস্ত করার ক্ষমতা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র বেন চ্যাং বলেন, প্রশাসন ও সিনেটের লক্ষ্য একই—ক্যাম্পাসে শান্তি ফিরিয়ে আনা—এবং তারা ‘চলমান সংলাপে’ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গত সপ্তাহে পুলিশ কলম্বিয়া ক্যাম্পাস থেকে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ম্যানহাটন ক্যাম্পাসের মূল প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভকারীদের তাঁবু সরিয়ে দেয়। কিন্তু শিগগিরই বিক্ষোভকারীরা ফিরে আসে ও আবারও তাঁবু গেড়ে বসে। কলম্বিয়ায় গণহারে গ্রেপ্তারের পর যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ধরনের বিক্ষোভ ও সমাবেশ করা হয়।

হোয়াইট হাউস ক্যাম্পাসে বাকস্বাধীনতার পক্ষে কথা বললেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ সপ্তাহে ‘ইহুদি–বিদ্বেষী বিক্ষোভের’ নিন্দা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, ক্যাম্পাসগুলো অবশ্যই নিরাপদ হতে হবে।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও। প্যারিসের বিখ্যাত সায়েন্সেস পো বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলপন্থী বিক্ষোভকারীরা একটি স্কুল ভবন দখল করে রাখা ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের চ্যালেঞ্জ জানায়। পুলিশ দুইপক্ষকে আলাদা করে রাখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা পরে ইসরায়েলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে ‘অভ্যন্তরীণ বিতর্ক’ এর বিনিময়ে তাদের পদক্ষেপ বন্ধ করতে সম্মত হয়।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension