
চীনে দৈনিক সংক্রমণ ৩ কোটি ৭০ লাখ
চীনে প্রতিদিন তিন কোটি ৭০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ। সংক্রমণের এই হার আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলে ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ব্লুমবার্গ জানায়, চীনের স্বাস্থ্য প্রশাসনের উপর মহল থেকেই এই গুরুতর তথ্য মিলেছে। গত তিন বছরে সারা বিশ্ব যখন মহামারির কবলে পড়েছিল, তখনও চীনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখের মতো।
ব্লুমবার্গের তথ্যানুযায়ী ডিসেম্বর মাসের শুধু প্রথম ২০ দিনের পরিসংখ্যান থেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের এই সংখ্যাটা পাওয়া গিয়েছে। এরপর পরিস্থিতির আরও অবনতি হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দেশ চীনের ১৮ শতাংশ মানুষই বর্তমানে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত। সরকারিভাবে দৈনিক তিন হাজার রোগী আক্রান্ত হচ্ছে বলে ঘোষণা করা হলেও প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বহুগুণ বেশি বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানাচ্ছে, রোগীদের মধ্যে কেউ অন্য দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার পর কোভিডে আক্রান্ত হলে তাকে কোভিড পজিটিভ রোগী হিসেবে ধরা হবে না। চীন সরকার এভাবে কোভিড আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা গোপন করছে বলে অভিযোগ তুলেছে অনেক পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম।
এ বিষয়ে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝিতেই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনির্ভর মডেলিং গ্রুপ হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন ইনস্টিটিউট (আইএইচএমই) একটি পূর্বানুমানে জানিয়েছে, আগামী ২০২৩ সাল নাগাদ চীনের প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে।
২০২০ সাল থেকে চীন তাদের ‘জিরো কোভিড পলিসি’ অনুযায়ী কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে এসেছে। কিন্তু কঠোর ওই নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিক্ষোভের পর দেশটির সরকার দুই সপ্তাহ আগে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করে দেয়। এরপর থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। এতে বয়স্কদের মধ্যে উচ্চ মৃত্যুহারের আশঙ্কাও বাড়তে শুরু করে।
আইএইচএমইর পর্যালোচনা অনুযায়ী আগামী পহেলা এপ্রিলের মধ্যে চীনে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা চূড়ায় পৌঁছাবে। আর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও সে সময় তিন লাখ ২২ হাজারে পৌঁছাতে পারে।, ততদিনে চীনের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ করোনায় সংক্রমিত হতে পারে। একই সঙ্গে তুলনামূলক কম কার্যকর টিকা ব্যবহার, ৮০ বছর ও তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে টিকাদানের হার কম হওয়ায় অনেকে কোভিডে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।