
যুদ্ধ বন্ধে কিয়েভে মিত্রদের অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করা উচিত: চীন
ইউক্রেনের মিত্রদের কিয়েভে অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করা উচিত এবং স্থায়ী শান্তি আনতে আলোচনার দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত। ইউরেশীয় বিষয়ক চীনের দূত লি হুই শুক্রবার এ কথা বলেছেন। এদিন বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের লি বলেন, ‘আমরা যদি সত্যিই যুদ্ধ বন্ধ করতে, জীবন বাঁচাতে এবং শান্তি অর্জন করতে চাই, তাহলে আমাদের যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করতে হবে।’
চীনা দূত্র বলেন, ইউক্রেন সংকটের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা যেভাবে বর্তমান অবস্থায় বিকশিত হয়েছে, তা সব পক্ষের যোগ্যতার গভীর প্রতিফলন।
যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বসা এবং আলোচনায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমানে ‘অনেক অসুবিধা’ রয়েছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘দুই পক্ষ শান্তি আলোচনার দরজা পুরোপুরি বন্ধ করেনি।’
ওয়াশিংটন ও অনেক ইউরোপীয় দেশ ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাংক এবং বিভিন্ন অস্ত্র সরবরাহ করায় লি হুই এ আবেদন করেন। ইউক্রেনের বাহিনী বর্তমানে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চল ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে অস্ত্রের বৃহত্তম সরবরাহকারী। গত বছর আক্রমণের পর থেকে দেশটি এ পর্যন্ত ইউক্রেনকে প্রায় ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে। গত মাসে যুক্তরাজ্যও রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ইউক্রেনকে আরো অস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার দেশ কয়েক ডজন হালকা ট্যাংক, সাঁজোয়া যান এবং আরো বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করবে। অন্যদিকে প্রাথমিক দ্বিধা সত্ত্বেও জার্মানি ইউক্রেনে অস্ত্রের অন্যতম বড় সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে।
এদিকে চীনের এ দূত গত মাসে ইউক্রেন শান্তি আলোচনার জন্য ইউরোপের রাজধানীগুলোতে সফর করেছিলেন। মে মাসে লি কিয়েভ, ওয়ারশ, প্যারিস, বার্লিন, ব্রাসেলস ও মস্কোতে ১২ দিনের সফর করেন। একটি চূড়ান্ত রাজনৈতিক মীমাংসার জন্য অভিন্ন ভিত্তি খুঁজে বের করতেই এ সফর বলে জানিয়েছিল চীন। লি বলেছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বৃদ্ধির ঝুঁকি এখনো বেশি।’ ‘পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করতে’ এবং পারমাণবিক স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব পক্ষকে অবশ্যই দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চীনের নেতা শি চিনপিংয়ের সরকার বলেছে, তারা নিরপেক্ষ এবং মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে চায়। তবে দেশটি রাজনৈতিকভাবে মস্কোকে সমর্থন করেছে।
ফেব্রুয়ারিতে বেইজিং একটি প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু ইউক্রেনের মিত্ররা জোর দিয়েছিল, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রথমে রাশিয়ান বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে।
বেইজিং রাশিয়ার আগ্রাসনের সমালোচনা করতে অস্বীকার করেছে এবং রাশিয়ার ওপর কূটনৈতিক আক্রমণকে প্রত্যাখ্যান করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের একজন হিসেবে তার মর্যাদা ব্যবহার করেছে।
সূত্র : আল জাজিরা