আন্তর্জাতিকযুক্তরাজ্য

লন্ডনে সুপারশপ থেকে চুরির মাল বিক্রি হচ্ছে সস্তায়, আড়াই কোটি টাকার পণ্য উদ্ধার

ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনে সাম্প্রতিক সময়ে শপ লিফটিং বা দোকান ও শপিং মলে চুরির ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (ওএনএস) প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে চুরি বেড়েছে ৫৪ শতাংশ।

জরিপের তথ্য বলছে, ইংল্যান্ডজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শপ লিফটিং। ২০২৩ সালে শুধু লন্ডনে দোকানে চুরির ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছিল ৫৮ হাজার, যেখানে ২০২৪ সালে প্রায় ৯০ হাজার চুরির ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এই চুরির প্রবণতা চলতি বছরও ঊর্ধ্বমুখী। পরিসংখ্যান বলছে, লন্ডনের বাইরে অন্যান্য শহরেও বেড়েছে দোকানে চুরির ঘটনা। তবে লন্ডনের তুলনায় বেশ কম। অন্যান্য শহরে ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় চুরি বেড়েছে ১৫ শতাংশ।

২০২৪ সালে লন্ডনে ব্যক্তিগত সম্পদ চুরির ঘটনাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, প্রায় ৪১ শতাংশ! তবে রাজধানী ছাড়া ইংল্যান্ডের অন্যান্য শহরে আবার এই অপরাধের হার কমেছে। ওএনএসের তথ্যমতে, লন্ডন ছাড়া অন্য শহরগুলোতে ব্যক্তিগত সম্পদ চুরির ঘটনা এক বছরের ব্যবধানে কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ, গ্রেটার ম্যানচেস্টারে এই অপরাধ ২০২৩-এর চেয়ে প্রায় ২৮ শতাংশ কম নথিবদ্ধ হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। লন্ডনের বাইরের শহরগুলোতে চুরির প্রবণতা কমলেও রাজধানীতে কেন হু হু করে বাড়ছে, তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন মেয়র সাদিক খান। গতকাল বৃহস্পতিবার এ ইস্যুতে মেয়রের অফিস একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে স্বীকার করা হয়েছে, চুরির মতো অপরাধ মোকাবিলায় মহানগর কর্তৃপক্ষের আরও অনেক কিছু করণীয় আছে। চুরিসহ অন্যান্য অপরাধ দমনে কর্তৃপক্ষ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

মেয়র সাদিক এর আগে রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের অপরাধ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। মেয়র বলেন, উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় রাজধানীতে অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হতে পারে।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ লন্ডনে শপ লিফটিং চক্রের বিরুদ্ধে এক অভিযানে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে লন্ডন পুলিশ। বৃহৎ খুচরা বিক্রেতাপ্রতিষ্ঠান থেকে চুরি হওয়া খাবার ও অ্যালকোহলের মতো জিনিসপত্র কম দামে বিক্রির সন্দেহে আটটি দোকানে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। পুলিশ এই অভিযানে সিনথেটিক ডিএনএ দিয়ে চিহ্নিত করা ৫ হাজার পণ্য থেকে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড (২ কোটি ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি) মূল্যের চুরি যাওয়া জিনিস উদ্ধার করে। লন্ডন মহানগর পুলিশ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সিলেকটাডিএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এত বেশি পরিমাণ চুরি হওয়া জিনিস উদ্ধার করল।

অবশ্য চুরি বাড়লেও লন্ডনে কমেছে অস্ত্র ও সহিংসতার মতো অপরাধগুলো। ওএনএসের জরিপ বলছে, লন্ডনে ২০ শতাংশ কমেছে অস্ত্র বহন, আঘাতজনিত সহিংসতা কমেছে ১৫ শতাংশ এবং কাউকে ফলো করা বা হয়রানি করার মতো ঘটনা কমেছে ১০ শতাংশ। এরপরও লন্ডনজুড়ে যত ছুরি হামলার ঘটনা, তার এক-তৃতীয়াংশই ঘটে লন্ডনে। এই শহরে প্রতি ৩০ মিনিটে একটি এমন আক্রমণের ঘটনা ঘটে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension