আন্তর্জাতিকএশিয়া

হিজাব আইন পর্যালোচনা করছে ইরান, মোরালিটি পুলিশ বিলুপ্তের খবর সত্য নয়

ইরানে নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক হিজাব আইন পর্যালোচনা করে দেখছে দেশটির পার্লামেন্ট ও বিচার বিভাগ। অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মোন্তাজেরি সংস্কারপন্থী গণমাধ্যম ইন্তেখাবকে এ কথা জানিয়েছেন। সম্প্রতি এই মোন্তাজেরিকে উদ্ধৃত করেই বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে যে, মোরালিটি পুলিশ তুলে দিচ্ছে ইরান। তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শক্তভাবে এমন প্রচারণার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছে, মোরালিটি পুলিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়, বিচার বিভাগের অধীনে নয়। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।

বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট হতে ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে মার্কিন গণমাধ্যমটি। তবে সেখান থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। ইরানে নারীদের জন্য প্রকাশ্যে চলাফেরার জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। আর এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে তৈরি করা হয়েছে মোরালিটি পুলিশকে। তারা ইসলামি শরিয়া মোতাবেক নারীদের সাবধান কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারেন।
মোনতাজেরি বলেন, যখন আমরা কোনো শহরে হিজাব ছাড়া নারীদের দেখি তখন আমাদের রাগ লাগে।

কর্মকর্তারাও এ নিয়ে বসে নেই। পার্লামেন্ট এবং বিচার বিভাগ উভয়ই এ নিয়ে কাজ করছে।
গতকালই আমরা পার্লামেন্টের সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আগামী এক দুই সপ্তাহের মধ্যেই একটা সমাধান পাওয়া যাবে। কিন্তু তার বক্তব্যে ১৯৭৯ সালে প্রণয়ন করা হিজাব আইন বাতিলের কোনো ইঙ্গিত ছিল না।

আরবি ভাষার রাষ্ট্রীয় চ্যানেল আল-আলম জানিয়েছে, বিদেশী গণমাধ্যমগুলো মোনতাজেরির মন্তব্যকে ভুলভাবে নিয়েছে। তারা ভেবেছে, ইরান মোরালিটি পুলিশ বিলুপ্তের ঘোষণা দিয়েছে। অথচ তিনি শুধু বলেছিলেন যে, মোরালিটি পুলিশের সঙ্গে বিচার বিভাগের সম্পর্ক নেই। ইরানের কোনো কর্তৃপক্ষই জানাননি যে, রাস্তায় হিজাব নিশ্চিত থেকে পিছিয়ে এসেছে সরকার। চলমান ‘দাঙ্গা’র সঙ্গেও এর কোনো সম্পর্ক নেই।

গত দুই মাস ধরে এই মোরালিটি পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে ইরানে। সেপ্টেম্বরে মাহশা আমিনি নামের এক ২২ বছরের যুবতীর পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর পরই রাস্তায় নেমে আসে লাখ লাখ মানুষ। ইরানের বড় শহরগুলোতে টানা আন্দোলন চলতে থাকে। হিজাব না পরার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আমিনিকে। তবে তার উপরে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। যদিও এতে বিক্ষোভের গতি কমেনি। বরঞ্চ ইসলামিক রিপাবলিকটির প্রতিটি কোনায় বিক্ষোভ ক্রমশ বড় হয়ে উঠতে থাকে।

প্রথমে আমিনির মৃত্যু নিয়ে বিক্ষোভ হলেও এক পর্যায়ে তা পরিণত হয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে। গোটা ইসলামি শাসন ব্যবস্থা পাল্টে দেয়ার দাবি জানাতে থাকে তারা। ফলে সরকারও কঠিনভাবে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করে। অন্তত ৪৫০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন পুলিশের গুলিতে। আহত হন আরও বহু মানুষ। বিক্ষোভকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও হামলার অভিযোগ উঠেছে ইরানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension