
মণিপুর সহিংসতায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন অমিত শাহ
ভারতের মণিপুরে সাম্প্রতিক জাতিগত সহিংসতার নেপথ্যে কোনো ষড়যন্ত্র ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখবে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্য পরিদর্শনের সময় এ কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘মণিপুর সহিংসতায় পাঁচটি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং একটি সাধারণ ষড়যন্ত্রের মামলার তদন্ত করবে সিবিআই।’
হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মণিপুর সহিংসতার কারণ খোঁজার তদন্তের প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবেন বলেও জানান মন্ত্রী।
সেই সঙ্গে রাজ্যে শান্তি ফেরাতে রাজ্যপালের নেতৃত্বে একটি পৃথক সমন্বয় কমিটি গড়ার কথাও জানান তিনি। সেই কমিটিতে বিজেপি শাসিত ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি সে রাজ্যের আদি বাসিন্দা মেইতেই জনগোষ্ঠী, কুকি, জোসহ বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
অমিত শাহের সফর চলাকালীনই বৃহস্পতিবার মণিপুর রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পি ডউঙ্গেলকে। তার জায়গায় রাজ্য পুলিশের নতুন মহাপরিচালক হিসেবে আনা হয়েছে ত্রিপুরার কর্মকর্তা রাজীব সিংকে।
সরকারি প্রতিবেদন বলছে, মেইতেইদের সঙ্গে কুকি, জো এবং অন্য কয়েকটি আদিবাসী গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ইতিমধ্যে সে রাজ্যে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহতের সংখ্যা প্রায় ২৫০। জাতিগত সহিংসতার জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। লুঠ হয়েছে কয়েক হাজার সরকারি অস্ত্র।
মিয়ানমার সীমান্তে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর হাতে ইতিমধ্যে সেই অস্ত্র পৌঁছেছে বলে অভিযোগ।
গত ৩ মে আদিবাসী ছাত্র সংগঠন অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব মণিপুরের (এটিএসইউএম) কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল। অভিযোগ, সে সময় কর্ণাটকের বিধানসভা ভোটের প্রচারে ব্যস্ত থাকায় মণিপুর পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়ার সময় পাননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অবশেষে দক্ষিণ ভারতের ওই রাজ্যে ভোটগণনা মেটার পরে গত ১৫ মে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সক্রিয় হয়েছিলেন তিনি।
সম্প্রতি মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফসিলি আদিবাসীর মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এর পরই আদিবাসী সংগঠনগুলো তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয়। কুকিসহ বিভিন্ন খ্রিস্টান আদিবাসী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে রাজ্য ভাগের দাবি তোলা হলেও তা খারিজ করে দেন অমিত শাহ।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা