মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী কোকা-কোলার
চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রত্যাশার চেয়েও বাড়তি বিক্রির কথা জানিয়েছে কোকা-কোলা। বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বাড়ানোরও পরও ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা পানীয় জায়ান্টের আয় বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো আয়ের পূর্বাভাস বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এপির খবরে বলা হয়েছে, কোকা-কোলা এখন ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ বার্ষিক আয় বাড়ার আশা করছে। যেখানে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। কোকের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে কোকা-কোলার আয় ১০ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১১০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। যেখানে বিশ্লেষকরা ১ হাজার ৫০ কোটি ডলার আয়ের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। এ সময়ে পরিমাণের হিসাবে বিক্রি বেড়েছে ৪ শতাংশ। এ সময়ে সংস্থাটির কোমল পানীয়ের বিক্রি ৩ শতাংশ বেড়েছে। এক্ষেত্রে জিরো সুগার কোকের উচ্চ চাহিদা নেতৃত্ব দিয়েছে। পাশাপাশি স্পোর্টস ড্রিংকস ও ফ্লেভারড ওয়াটারের বিক্রি বেড়েছে ৬ শতাংশ। যেখানে কফির বিক্রি বাড়ার হার ৫ শতাংশ। সংস্থাটির জুস ও দুগ্ধ বিক্রির হার সমতল ছিল। তৃতীয় প্রান্তিকে সংস্থাটির মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেড়ে ২৮০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। শেয়ারপ্রতি এ মুনাফার পরিমাণ ৬৯ সেন্ট। বিশ্লেষকরা শেয়ারপ্রতি ৬৪ সেন্ট মুনাফার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
কোকা-কোলার চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী জেমস কুইন্সি বলেন, ভোক্তারা সাধারণত খাদ্যমূল্যের মূল্যস্ফীতির মুখেও স্থিতিস্থাপক ছিল। যেখানে যুক্তরাজ্যের মতো বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম চার দশকের রেকর্ড উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। এ অবস্থায় জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ছোট প্যাকেজের উচ্চ চাহিদা দেখেছে কোকা-কোলা। বিশেষ করে ইউরোপীয় বাজারে জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় মোকাবেলায় ভোক্তারা ছোট কোক বেশি পছন্দ করছেন।
জেমস কুইন্সি বলেন, বিক্রিতে জীবনযাত্রার সংকটের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবুও আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, গ্রাহকরা কোকা-কোলার পানীয় কেনা অব্যাহত রাখবে। ব্যয়সচেতন ক্রেতাদের জন্য কোক যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও আরো কিছু বাজারে ছোট বোতলে বিক্রি শুরু করেছে। পাশাপাশি প্রিমিয়াম ক্যানের মাধ্যমে আমরা ধনী গ্রাহকদের আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাব। সব মিলিয়ে এসব পদক্ষেপ আমাদের আগামী ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
কাঁচামাল ও পরিবহনে উচ্চ ব্যয়ের বিষয়টি উল্লেখ করে কোক সারা বছর ধরে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। যদিও এমন পদক্ষেপের পরও বিক্রি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। তবে আগামী ছয় থেকে ১২ মাসে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। স্টেডিয়াম, মুভি থিয়েটার ও অন্য স্থানগুলো বিপুল মানুষ জড়ো হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠান প্রধান বাজারগুলোয় বিপণন ব্যয় আরো বাড়িয়েছে। তবে চীনের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ব্যতিক্রম ছিল। কারণ কভিডজনিত লকডাউন অব্যাহত থাকায় দেশটিতে কোকের বিক্রি প্রভাবিত হয়েছে।