আঞ্চলিকবাংলাদেশ

রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবেছে খুলনা

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে খুলনায়। একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে খুলনা শহরের অধিকাংশ সড়কে ২ থেকে ৩ ফুট পানি জমে। এতে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল শহরের অনেক এলাকায়।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় রেকর্ড ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত ১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১৩০ মিলিমিটার।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, ‘গত ৫ বছরে খুলনায় ২৪ ঘণ্টায় এত বেশি বৃষ্টি হয়নি। এছাড়া চলতি বছরে একদিনে খুলনায় এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় একটি নিম্নচাপ অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাতসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।’

‘একইসাথে পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-২ ফুটের অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হচ্ছে।’

আমিরুল আজাদ বলেন, ‘সৃষ্ট মেঘমালা ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। ফলে ঝড়ো হাওয়া এখন কমে গেছে। বর্তমানে খুলনায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ থেকে ২০ কিলোমিটার। আগামী ৩ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

ভারী বৃষ্টির কারণে খুলনা শহরের রয়্যাল মোড়, সাতরাস্তা মোড়, মডার্ণ মোড়, ময়লাপোতা, শীববাড়ী, সোনাডাঙ্গা, নিরালা, দৌলতপুর, রূপসা, মুজগুন্নী, নতুনরাস্তা ও বয়রাসহ অধিকাংশ এলাকায় ২ থেকে ৩ ফুট পানি জমেছিল। আবাসিক বাড়ি, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দোকানগুলির নিচ তলায় পানি প্রবেশ করেছিল।

খুলনা মহানগরীর রূপসা এলাকার বাসিন্দা এহতেশামুল হক শাওন বলেন, ‘আমরা ১৯৮৭ সালে বাড়ি বানিয়েছি। কখনও আমাদের বাড়ির নিচতলায় পানি ওঠেনি। তবে গত রাতে এত বেশি বৃষ্টি হয়েছে যে, তাতে আমাদের বাড়ির নিচতলায় পানি প্রবেশ করেছে।’

নিরালা এলাকার বাসিন্দা বদরউদ্দীন বলেন, ‘শহরের অনেক ড্রেনে কাজ চলছে। সেজন্য বৃষ্টির পানি আটকে পড়েছে। তাতেই দুর্ভোগ বেড়েছে। এছাড়া শহরের নদীগুলি বেদখল রয়েছে। সেখান থেকে পানি নামতে পারে না। যার কারণে মানুষের দুর্ভোগও কমে না। ‘

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে খুলনার অধিকাংশ রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছিল। আমাদের কর্মীরা দ্রুত বিভিন্ন ড্রেনের নালা ছাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে পানি সরে গেছে।’

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension