বাংলাদেশশিক্ষা

সেই মেডিক্যাল শিক্ষক বরখাস্ত, রিমান্ডে চায় ডিবি

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত আলোচিত সেই শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (৬ মার্চ) রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দুর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এদিকে ক্লাসরুমে পিস্তল দিয়ে শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় ওই শিক্ষক স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দিলেও অস্ত্র মামলার তথ্য উদঘাটনের জন্য তাঁকে রিমান্ডে চেয়েছে সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশ।

এ বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আমিরুল হোসেন চৌধুরী জানান, প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. মো. রায়হান শরীফ ফৌজদারি অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়ায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সাময়িক বরাখাস্ত থাকাকালীন তিনি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্ত হবেন।

অধ্যক্ষ আরো বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল ডা. রায়হান শরীফ যেন কলেজে না থাকতে পারেন। এরই মধ্যে তাঁকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি এসেছে। আশা করি শিক্ষার্থীরা এখন শান্ত থাকবে।’

সিরাজগঞ্জ ডিবির ওসি জুলহাজ উদ্দীন জানান, গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার বিকেলে অভিযুক্ত রায়হান শরীফ শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পাশাপাশি অস্ত্র কোথা থেকে ক্রয় করেছেন, সে কথাও স্বীকার করেছেন। তবে অস্ত্র মামলায় তাঁর কাছে আরো তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন হওয়ায় তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। যে কারণে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

আদালত আবেদনের শুনানি শেষে আদেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। তবে এখনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে শিক্ষক রায়হান শরীফ পিস্তল হাতে শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে ওই পিস্তল থেকে গুলি করলে এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমাল (২২) আহত হন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা দেখা দেয়।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি পিস্তলসহ ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁর ব্যাগ থেকে আরো একটি পিস্তল, গুলি ও বেশ কিছু ছুরি উদ্ধার করা হয়। একই দিন রাতে আহত শিক্ষার্থীর বাবা বগুড়ার ধুনট উপজেলার ধামাচামা গ্রামের আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রায় একই সময়ে অবৈধ পিস্তল, গুলি ও ছুরি উদ্ধারের ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক ওয়াদুদ আলী বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন। এ ছাড়াও একই দিন রাতে ঘটনার তদন্তে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ওই কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। অভিযুক্ত প্রভাষক রায়হান শরীফ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে এবং শহরের দত্তবাড়ী মহল্লার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে রয়েছেন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension