
আজ নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের প্রয়াণ দিবস
আজ রবীন্দ্র পরবর্তী বাংলা নাটকের প্রবাদ পুরুষ নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের প্রয়াণ দিবস।
সেলিম আল দীনের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে দিনব্যাপী নানা আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টায় জাবিতে সেলিম আল দীনের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
দুপুর আয়োজিত এক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. রশীদ হারুন। প্রধান আলোচক ছিলেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ড. আফসার আহমদ।
এ ছাড়া ‘ঢাকা থিয়েটার’ ও ‘স্বপ্নদল’ আলাদাভাবে সেলিম আল দীনকে স্মরণের আয়োজন করেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রত্যেকটি আয়োজনই সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ১৩তম প্রয়াণবার্ষিকী স্মরণে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদল বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অনলাইন ও মঞ্চে আয়োজন করেছে দু’দিনব্যাপী ‘নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন স্মরণোৎসব ২০২১’। এবারের স্লোগান ‘ঐতিহ্য-রবীন্দ্রনাথ-সেলিম আল দীনে মুক্তি, বিস্ময়ে তাই বিশ্ব দেখে বাঙলার শিল্পশক্তি।’
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যাচার্যের সমাধিতে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ ও শোভাযাত্রা। সন্ধ্যা ৭টায় ফেইসবুক লাইভে ‘সেলিম আল দীনের প্রস্তুতিপর্বের নাটক: সমাজবাস্তবতা, রাজনীতি ও দূরদর্শিতা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেবেন বেশ কয়েকটি নাট্যদলের সদস্যরা।
এছাড়া এদিন ভারতের নাট্যসংগঠন ‘রিষড়া দূরায়ন’ আয়োজিত জুট থিয়েটার উৎসবের ‘ইন্টারন্যাশনাল ভার্চুয়াল থিয়েটার উৎসবে স্বপ্নদল প্রযোজিত ‘হরগজ’ এর সরাসরি মঞ্চায়ন হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটারে মঞ্চায়ন হবে জাহিদ রিপনের নির্দেশনায় সেলিম আল দীনের ‘হরগজ’।
বাংলা নাটকের নতুন ধারার প্রবর্তক নাট্যকার সেলিম আল দীন। ২০০৮ সালের আজকের দিনে তিনি মারা যান। নাট্যকার সেলিম আল দীনকে অলিখিতভাবেই নাট্যাচার্য হিসেবে অভিহিত করা হয়।
নাট্যরচনায় ভিন্নধারার অনুসন্ধান তাকে এ স্থানে নিয়ে এসেছে। বাংলা নাটকের শেকড়সন্ধানী নাট্যকার হিসেবেই প্রবাদ পুরুষ নাট্যাচার্যকে এই উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন সেলিম আল দীন। দীর্ঘদিন বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করার পর ১৯৮৬ সালে তিনি নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে যোগদান এবং বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ১৯৮১-৮২ সালে তিনি এবং নাট্যনির্দেশক নাসির উদ্দিন ইউসুফ গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার।
তার প্রথম রেডিও নাটক ‘বিপরীত তমসায়’। প্রথম মঞ্চনাটক ‘সর্পবিষয়ক গল্প’ ১৯৭২ সালে মঞ্চায়ন হয়। তিনি শুধু নাটক রচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি, বাংলা ভাষার একমাত্র নাট্যবিষয়ক কোষগ্রন্থ বাংলা নাট্যকোষ সংগ্রহ, সংকলন, প্রণয়ন ও সম্পাদনা করেছেন। তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, নান্দিকার পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার সেনেরখিলে গ্রামে জন্মেছিলেন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন। ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় মসজিদের কাছে তাকে সমাহিত করা হয়। তার উল্লেখযোগ্য নাটক সমূহ হলো- জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন, মুনতাসির, শকুন্তলা, কীত্তনখোলা, কেরামতমঙ্গল, যৈবতী কন্যার মন, চাকা, নিমজ্জন, ধাবমান, পুত্র ইত্যাদি।❐