অঙ্গনাজাতিসংঘ

জাতিসংঘে নারীর ক্ষমতায়নের অগ্রগতি তুলে ধরল বাংলাদেশ

নিউ ইয়র্ক: জাতিসংঘে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাংক অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে প্রযুক্তির ব্যবহারসহ অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে।

জাতিসংঘে মন্ত্রী পর্যায়ের এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বুধবার (৮ মার্চ) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে চলমান কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেনের ৬৭তম অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের বিভিন্ন নীতিমালা ও উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ সফলভাবে গড়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ অভিযাত্রা শুরু করেছেন। এ নতুন অভিযানের আওতায় প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হবে বাংলাদেশের সব অর্থনৈতিক কার্যক্রম।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এ প্রযুক্তি-নির্ভর উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নারীরা নিজেদের সম্পৃক্ত করার সমান সুযোগ পাবে, যা তাদের বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সহায়তা করবে।

প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে তুলে ধরেন, সারাদেশে প্রায় পাঁচ হাজার ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যাতে অর্ধেকেরও বেশি নারী কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।

তিনি বাংলাদেশের অন্যান্য ভালো কাজের উদাহরণও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সামনে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের ৮০ শতাংশের বেশি নারী, যারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের মাসিক বেতন পেয়ে থাকেন। বর্তমান সরকার আরেকটি প্রযুক্তিভিত্তিক প্রকল্প ‘ইনফো লেডি’ চালু করেছে, যার মাধ্যমে সারাদেশের প্রায় ১০.২৫ মিলিয়ন গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া, নারীদের প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষার জন্য ‘জয়’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে এবং দুটি সার্বক্ষণিক হটলাইন সার্ভিস ১০৯ এবং ৯৯৯ প্রবর্তন করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসা এসব বিষয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক গভীরভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে আইসিটিতে নারীর অংশগ্রহণ ৩০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা প্রণয়ন করেছে।

সরকারের এ লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী এসব লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘ ও উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা ও অংশীদারিত্ব কামনা করেন।

বৈঠকের আগে প্রতিমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশ নেন। তাছাড়া সকালে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ কর্তৃক আয়োজিত এক মন্ত্রী পর্যায়ের প্রাতরাশ সভায় অংশ নেন তিনি। বিগত ৬ মার্চ তিনি সফররত মন্ত্রীদের জন্য আইসল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডের স্থায়ী মিশন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিন জ্যাকবসডোত্তির এবং সুইস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অফ উইমেন হল জাতিসংঘের প্রধান বৈশ্বিক আন্তঃসরকারি সংস্থা যা লিঙ্গ সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বিশেষভাবে কাজ করে থাকে। এ কমিশনের ৬৭তম চলতি অধিবেশন বিগত ৬ মার্চ শুরু হয়েছে। যা চলবে আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension