
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনায় রাশিয়ার নতুন শর্ত
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ায় রাশিয়া অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা ফের শুরু করার জন্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়েছে। আর সে শর্ত পূরণ না হলে এ আলোচনা শুরু করার কোনো সম্ভাবনা দেখছে না ক্রেমলিন।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটিকে বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এ কথা জানিয়েছেন।
রেডিও স্পুটনিক-এ একটি লাইভ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ান ফেডারেশন সরাসরি জড়িত এমন বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি অস্ত্র সরবরাহ করতে চাইছে। অর্থাৎ তারা এই সব অস্ত্র সরবরাহ করবে, তারা কিয়েভ সরকারকে আরও বেশি রক্তপাত ঘটাতে উৎসাহিত করবে, তারা চরমপন্থি কার্যকলাপের জন্য অর্থ বরাদ্দ করবে। আমরা তাদের সঙ্গে একই টেবিলে বসব? এবং তাদের স্বার্থ বিবেচনা করে তাদের সঙ্গে পারস্পরিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করব?’
মারিয়া জোর দিয়ে বলেন, মস্কো নিউ স্টার্ট চুক্তিটির গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত। কারণ এটি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েরই সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করবে। তবে আলোচনা ফের শুরু করার আগে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে হবে। এ ছাড়া আলোচনা শুরু করার কোনো সম্ভাবনা নেই।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা গত মঙ্গলবার কায়রোতে চুক্তিটি দীর্ঘায়িত করার বিষয়ে নতুন করে আলোচনার জন্য মিলিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈঠকটি হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই তা স্থগিত করা হয়েছিল। তবে এ আলোচনার পরবর্তী কোনো তারিখও ঘোষণা করা হয়নি।
মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশন ট্রিটি (স্টার্ট) ওয়ান চুক্তিটি হয় ১৯৯১ সালে। যা কার্যকর হয় এর তিন বছর পর। ওবামা প্রশাসনের সময় ২০১০ সালে নিউ স্টার্ট চুক্তি সই করে দুই দেশ। যা বাড়িয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এতে বলা হয়, দু’দেশের পরমাণু স্থাপনা ১৫৫০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে। পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্র, আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক বোমারু বিমানের সংখ্যা সীমিত করে। পাশাপাশি কৌশলগত পারমাণবিক সরবরাহকারী যানবাহনের মোট সংখ্যা ৮০০ এর মধ্যে রাখা বাধ্যতামূলক করে দেয়।
রাশিয়া আগস্ট মাসে চুক্তির অধীনে এসব বিষয় পরিদর্শনের ব্যবস্থা স্থগিত করে দেয়। কারণ, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার পরিদর্শকদের যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়। মস্কোর দাবি এর কারণে ওয়াশিংটন অন্যায্য সুবিধা লাভ করছে। তাই মস্কো জানিয়েছে, সাম্য ও সমতার নীতিগুলো মেনে চললে ফের পরিদর্শন শুরু হতে পারে।