
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ঐতিহাসিক মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টে উপচে পড়া দেশি-বিদেশি দর্শকশ্রোতাদের মাতালেন জার্মানির বিশ্ববিখ্যাত ব্যান্ড দল স্করপিয়নস। সে অনুযায়ী প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রোতাদের সন্তুষ্ট করতে পারে নি বাংলাদেশের চিরকুট।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৬ মে) অনুষ্ঠিত গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টের শুরুতে ইংরেজিতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এরপর প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কাদেরি কিবরিয়াসহ অনুষ্ঠান উপস্থিত মন্ত্রী ও সাংসদরা মঞ্চে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের ২০ হাজার ৭ শত ৮৯ আসন বিশিষ্ট মিলনায়তনের প্রায় পুরোটাই ছিল দর্শকশ্রোতায় ভর্তি। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল বিদেশি দর্শক, বিশেষ করে ইউরোপিয়ান নাগরিক। তারা মুলত এসেছিল জার্মানির বিশ্ববিখ্যাত ব্যান্ডদলস্করপিয়নসের গান শুনতে।
স্করপিয়নস ব্যান্ডদল যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী ব্যাপক প্রচারণা চালানোর ফলে প্রচুর সংখ্যক বিদেশি দর্শকের সমাগম ঘটে।
স্করপিয়নসের যুক্তরাষ্ট্রের ভক্তরা নতুন শ্লোগান টিকেটস টু সী দ্য ‘নো ওয়ান লাইক ইউ’ রকারস লাইভ আর অ্যাভেইলাবল এভেরিহোয়ার টিকেটস আর সোল্ড অর্থাৎ টিকিট বিক্রি হয় যেখানে সেখানে ‘তোমার মতো কেউ নেই’ রকারদের লাইভ দেখার টিকিট পাওয়া যায়। এনজে ডটকম, স্টাভাব, টিকেটমাস্টার, সিটগ্রিক, টিকেট সিটি ও মেগা সিটসের ওয়েব সাইট থেকে বিদেশিরা টিকেট কেনেন বলে জানা যায়।
এসব ওয়েবসাইটে টিকেট পাওয়া যাচ্ছে তার কোন সন্ধানই জানতেন না প্রবাসী বাংলাদেশিরা দর্শক-শ্রোতারা। অনুষ্ঠানের এক সপ্তাহ আগে তারা শুধুমাত্র টিকেটমাস্টার ডটকমের খবরটি জানতে পারেন।
গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টে বেশিরভাগ দর্শক হবার কারণ হলো আয়োজক সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়। তাদের তেমন কোনো প্রচারণা ছিল না। অনুষ্ঠানের স্থানীয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট মেইন স্ট্রিম মিডিয়া নামের প্রতিষ্ঠানটি প্রকাশ্যে আসে নি। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ১৫টি সাপ্তাহিক পত্রিকার মধ্যে মাত্র ৪ থেকে ৫টি পত্রিকায় দায়সারা গোছের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এসব বিজ্ঞাপনে কনসার্টের সময় সূচি, টিকেটের দাম, টিকেট পাওয়ার স্থান এবং প্রয়োজনে কার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে এসব বিষয়ের কোনো উল্লেখ ছিল না। এমনকি প্রচারিত বিজ্ঞাপনগুলোতে ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের ঠিকানাও উল্লেখ করা হয় নি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চিরকুট ব্যান্ড দলের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা ছিল ৩০ মিনিট। শিল্পীরা শুধু তাড়াহুড়া করছিলেন। এর ফলে প্রায় প্রতিটি গানের স্থায়ী ও একটি করে অন্তরা গেয়ে ছেড়ে দেন। মুক্তিযুদ্ধ সংশ্লিষ্ট তেমন কোনো গান চিরকুট পরিবেশন করে নি। দু’টি দেশাত্ববোধক গান পরিবেশন করা হলেও গায়কী তেমন ভালো হয়নি বলে দর্শকরা মন্তব্য করেন। চিরকুটের ভোকালিস্ট শারমিন সুলতানা সুমি গান পরিবেশনের চেয়ে ইংরেজিতেই বেশি কথা বলার ফলে শ্রোতাদের মাঝে বিরক্তি দেখা দেয়। তিনি গান গাইছেন বাংলায় আর কথা বলছেন ইংরেজিতে, বিষয়টিকে প্রবাসী বাংলা ভাষাভাষীরা সহজে মেনে নিতে পারেন নি।