জাতিসংঘে স্থায়ী সদস্য পদে ভারতকে সমর্থন দিল যেসব দেশ
কয়েক দশক ধরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পদের দাবি জানিয়ে আসছিল ভারত। এবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেশটিকে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র। ফলে বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের তিনটিই ভারতের পক্ষে এলো।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতকে পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়ার পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে ভারতের দাবির পক্ষে সমর্থন জানান স্টারমার।
কয়েক দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো ভারতের দাবির পক্ষে কথা বলেছেন। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, নিরাপত্তা পরিষদে ‘আরও বেশি দেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে’।
বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য ও ১০টি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে। অস্থায়ী সদস্যরা নিজ নিজ অঞ্চল থেকে দুই বছরের মেয়াদে নির্বাচিত হয়।
স্থায়ী সদস্যরা হলো- রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র। স্থায়ী সদস্যরা নিরাপত্তা পরিষদের যে কোনো সিদ্ধান্তে ভেটো দিতে পারে।
বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে ভারতকে স্থায়ী সদস্য করার পক্ষে জোরালো যুক্তি দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো।
তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদের দরজা বন্ধ থাকবে এবং প্রতিটি পক্ষ শুধু তাদের নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষা করবে, ততদিন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে বাধার মুখে পড়ব। আসুন জাতিসংঘকে আরও কার্যকর করে তুলি। এ বিষয়ে প্রাথমিক উদ্যোগ হওয়া উচিত একে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলা। এ কারণে নিরাপত্তা পরিষদের পরিসর বাড়ানোর পক্ষে মত দিচ্ছে ফ্রান্স।
গত সপ্তাহে জো বাইডেনও ভারতের পক্ষে বক্তব্য দেন। ওয়াশিংটনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনায় বাইডেন বলেন, তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সংস্কার চান। তিনি দেখতে চান, নিরাপত্তা পরিষদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সংগঠনে ভারতের অংশগ্রহণ বাড়ুক।
নয়াদিল্লির দাবি, ১৯৪৫ সালে গঠিত ১৫ জাতির কাউন্সিল যুগের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়। ২১ শতকের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন নেই এই সংস্থাটিতে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানও জাতিসংঘের সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বর্তমান সিস্টেম ১০টি অস্থায়ী সদস্যকে উপেক্ষা করে পাঁচটি স্থায়ী সদস্যকেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে, যা পরিবর্তন হওয়া সময়ের দাবি।
তিনি আগেও এ বিষয়টি নিয়ে বলেছেন যে, ‘পৃথিবী এই পাঁচটি দেশের চেয়েও বড়’।
অপরদিকে গত রোববার জাতিসংঘ মহাসচিব ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে ‘সেকেলে’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং জানিয়েছিলেন যে, এই সংস্থার কর্তৃত্ব কমছে।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস মন্তব্য করেন, বিশ্ব সংস্থাটির সদস্য পদ ও কার্যধারায় সংস্কার না আনলে এটি অদূর ভবিষ্যতে সব ধরনের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।