
পুলিশের ওপর হামলা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস মুক্তি পেয়েছেন। আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আদালতে তাদের জামিননামা দাখিল করা হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জামিননামা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে। এরপর আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ সন্ধ্যায় একমাস পর মুক্তি পান তারা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানি শেষে এ দুই নেতাকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল রাখেন। সেসময়ই বিএনপির আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন যে, দুই শীর্ষ নেতার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে জমায়েত হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে একজনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হন। গ্রেফতার করা হয় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাসহ বিএনপির কয়েকশ নেতাকর্মীকে। পরদিন রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে। ৯ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও উসকানি দেয়ার মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। তাদের পক্ষে জামিন আবেদন হলেও তা নাকচ করে পাঠানো হয় কারাগারে।
সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন, মতিঝিল, শাহজাহানপুর ও রমনা থানায় চারটি মামলা করে পুলিশ। সব মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয় সেসব মামলায়। তাদের মধ্যে ৭২৫ জনের নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছিল। ওই তালিকায় মির্জা ফখরুল বা মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না। গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করেন মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে তিন দফা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তাদের জামিন আবেদন নাকচ করেন।
পরে ৫ জানুয়ারি বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দীন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে পরদিনই রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখেন এবং একই সঙ্গে ওই সময় পর্যন্ত নিম্ন আদালতে জামিননামা দাখিল না করতে বলা হয়। গতকাল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানি শেষে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখে আদেশ দেন।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। বিএনপির দুই নেতার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এএম মাহবুবউদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, সগীর হোসেন লিয়নসহ অন্য আইনজীবীরা।