প্রবাস

নিউ ইয়র্ক সিটিতে ২১ ফেব্রুয়ারি ‘মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা

নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিল বাংলাদেশের মহান শহীদ দিবস ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার এলাকা থেকে নির্বাচিত সিটি কাউন্সিল মেম্বার আমান্দা ফারিয়াস উত্থাপিত একটি রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করলেও নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে স্বীকৃতি মিললো এই প্রথম।

রেজ্যুলেশনটি স্পন্সর করে সিটি কাউন্সিলের কমিটি অন কালচারাল অ্যাফেয়ার্স, লাইব্রেরিজ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারগ্রুপ রিলেশন্স। এই রেজ্যুলেশনের কো-স্পন্সর ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সিটি কাউন্সিল মেম্বার শাহানা হানিফ। এই রেজ্যুলেশনের অন্য স্পন্সররা হলেন কাউন্সিল মেম্বার টিফানি ক্যাভান, জুলি ওয়ান, ক্রিস্টাল হাডসন, শেখর কৃষ্ণান, এরিক ডাইনোউইটজ, নাতাশা উইলিয়ামস, চি ওসি, অ্যালেক্স এ্যাভাইলস, ক্রিস্টোফার মার্টি, ফারাহ লুইস, জুলি মেনিন, পিয়েরিনা অ্যানা স্যানচেজ, কারলিনা রিভেরা, মারজোরি ভেলাজকুয়েজ ও জেমস জিনারো।

রেজ্যুলেশনে বলা হয়, ২১ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্ক সিটিতে মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হবে। এই ঘোষণা দেয়ার কারণ বাংলাদেশি কমিউনিটির কাছে বাংলা ভাষার প্রতি যে গুরুত্ব তাকে সম্মান প্রদর্শন করা। সেই সঙ্গে নিউ ইয়র্ক সিটিতে যে কালচারাল ডাইভারসিটি বা সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রয়েছে তাকে তুলে ধরা।

সিটি কাউন্সিল মেম্বার আমান্দা ফারিয়াস বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে আট শতাধিক ভাষার মানুষ বাস করছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাষার মানুষ বাস করেন কুইন্সে। কুইন্সের চেয়ে অধিক ভাষার মানুষ বিশ্বের আর কোন এলাকায় নেই। এমনি অবস্থায় আমাদের নিজ নিজ মাতৃভাষাকে যথাযথভাবে সম্মান প্রদর্শন করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। এই বহুজাতিক এই সিটির বর্ণিল বৈশিষ্ট অটুট রাখতে আমান্দা ফারিয়াস বলেন, ‘এই বিজয়কে উদযাপনের জন্যে আমার নির্বাচনী এলাকা ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ‘মাতৃভাষা দিবস’-এর র‌্যালি হবে। আমি সকলকে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

জ্যাকসন হাইটস থেকে নির্বাচিত সিটি কাউন্সিল মেম্বার শেখর কৃষ্ণান রেজুলুশন উত্থাপনকারী কাউন্সিল মেম্বার আমান্দা ফারিয়াসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ তাদের মাতৃভাষার স্বীকৃতি পাওয়ার লক্ষ্যে লড়াই করেছে। আমরা তাদের সেই লড়াইকে সম্মান জানাই। তাদের সংস্কৃতি ও ভাষাকে সম্মান জানাই। আমরা চাই সব ভাষা ও সংস্কৃতি স্বমহিমায় বেঁচে থাকুক নিউ ইয়র্ক সিটিতে।

তিনি আরো বলেন, কুইন্স হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ডাইভারস এথনিক জনগোষ্ঠীর আবাস এলাকা। কুইন্সে সবচেয়ে বেশি ভাষার মানুষও বাস করে। কুইন্স হচ্ছে আমাদের ফিউচার। বাংলা ভাষা আমার খুব প্রিয়। আমার প্রিয় একটি কবিতা হলো যদি ‘তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলোরে।’ তিনি কাউন্সিল মেম্বার আমান্দা ফারিয়াসের রেজুলুশন ২১ ফেব্রুয়ারিকে সম্মান জানিয়ে ঐদিন নিউ ইয়র্ক সিটিতে মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। শেখর কৃষ্ণান যখন বক্তব্য রাখছিলেন তখন তার সামনে বাংলাদেশের একটি পতাকা রাখা ছিল।

রেজুলুশনটি গৃহীত হবার পর নিউ ইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম নারী কাউন্সিল মেম্বার শাহানা হানিফ বলেন, প্রথম বাংলাদেশি সিটি কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে আমি অভিভূত, উৎফুল্ল এবং আনন্দিত বাঙালির মাতৃভাষা দিবসকে শ্রদ্ধাভরে উদযাপনের রেজ্যুলেশনটি গৃহীত হওয়ায়।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension