
পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে প্রেমিকের কাছে, মেরে-কেটে বেঁচে দিল প্রেমিক
পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে দূর দেশ থেকে আসা প্রেমিকাকে খুন করে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করে দিয়েছে পাষণ্ড প্রেমিকের! প্রমাণ লোপাটের জন্য প্রেমিকার দেহ টুকরো টুকরো করে সমুদ্রেও ভাসিয়ে দিয়েছে!
ব্লাঙ্কা আরেলানো। বয়স ৫১। মেক্সিকোর বাসিন্দা। অনলাইনে ডেটিং অ্যাপে তার পরিচয় হয়েছিল পেরুর বাসিন্দা হুয়ান পাবলোর সঙ্গে। তাদের দুজনের মধ্যে সেই সম্পর্ক অনেক দূর গড়ায়।
পাবলোর সঙ্গে প্রেম করে তার সঙ্গে সংসার করার সিদ্ধান্ত নেন ব্লাঙ্কা। পরিবারের সদস্যদের কাছে তার এই সম্পর্কের কথাও জানিয়েছিলেন ব্লাঙ্কা। তারা এই সম্পর্কে সম্মতিও দিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Jamás creí estar en esta situación, hoy pido apoyo y difusión para localizar a una de las personas más amadas e importantes de mi vida. Mi tía Blanca Olivia Arellano Gutiérrez desapareció el día Lunes 07 de Noviembre en Peru, ella de origen Mexicano, tememos por su vida+ pic.twitter.com/4aHRuv0zAW
— Karla Arellano (@itskararellano) November 12, 2022
অন্যদিকে, পাবলোও নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ব্লাঙ্কাকে। আর সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে মেক্সিকো থেকে পাঁচ হাজার কিলোমিটার উড়ে ব্লাঙ্কা পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রেমিকের কাছে।
পেরুতে যাওয়ার আগে ব্লাঙ্কা তার পরিবারকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি কয়েক দিনের জন্য পেরুর রাজধানী লিমায় যাচ্ছেন। ডেটিং অ্যাপে যে মানুষটির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তার সঙ্গে কয়েক দিন কাটিয়ে আবার ফিরে আসবেন।
পেরুর হুয়াচো সৈকতশহরে থাকতেন ব্লাঙ্কার প্রেমিক পাবলো। পুলিশ সূত্রে খবর, ব্লাঙ্কা নভেম্বরের শুরুতেই হুয়াচো শহরে পৌঁছান। সেখান থেকে বাড়িতে যোগাযোগও করেছিলেন।
ব্লাঙ্কা বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন, কয়েক দিনের জন্য যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, হুয়াচো পৌঁছে ভাইঝি কার্লা আরেলানোকে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, তার প্রেমিকের সঙ্গে ভালই দিন কাটছে। কিন্তু সেটাই ছিল তার শেষ ফোন।
বেশ কয়েক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর ব্লাঙ্কার কোনও ফোন বা উত্তর না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর ব্লাঙ্কার সঙ্গে বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
৭ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ব্লাঙ্কা। ১২ নভেম্বর তার ভাইঝি কার্লা টুইট করেন, ‘কোনও দিন ভাবিনি এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাইছি। আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটিকে খুঁজে পাচ্ছি না। পেরুতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন আমার কাকিমা ব্লাঙ্কা আরেলানো।’
ব্লাঙ্কার পরিবার একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। মেক্সিকোর পুলিশ যোগাযোগ করে পেরু পুলিশের সঙ্গে। ইতিমধ্যে হুয়াচোর সমুদ্রসৈকতে এক নারীর কাটা হাত উদ্ধার হয়। আঙুলে একটি আংটি ছিল। সেখান থেকে মেক্সিকো পুলিশের কাছে ওই ছবি পাঠায় পেরু পুলিশ। শনাক্তকরণের জন্য থানায় ডাকা হয় ব্লাঙ্কার পরিবারের সদস্যদের। আংটি দেখেই চিনতে পারেন তারা। হাতটি ব্লাঙ্কারই।
কাটা হাত উদ্ধারের পরদিন আবারও ক্ষতবিক্ষত কাটা মাথা এবং কিছু দেহাংশ ভেসে আসে হুয়াচো সৈকতে। পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য পাঠায়।
ব্লাঙ্কার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে হুয়াচো থেকে তার প্রেমিক পাবলোকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, ব্লাঙ্কাকে খুন করেছেন তিনি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নারীর দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ উধাও ছিল। সেই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কোথায় তা জানার জন্য পাবলোকে চাপ দেওয়া শুরু করে পুলিশ।
পুলিশি জেরায় পাবলো স্বীকার করেন যে, ব্লাঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও চক্রের যোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।