বাংলাদেশমুক্তিযুদ্ধ

খুলছে রাজাকারের তালিকা প্রণয়নের পথ

রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। এই তালিকা তৈরির বিধান রেখে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০২২-এর সংশোধিত খসড়া সরকারের সায় পেয়েছে।

সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের এই খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন অনুযায়ী একটি কাউন্সিল থাকবে। এর প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকবে। পদাধিকারবলে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান থাকবেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। কাউন্সিলে সদস্যসংখ্যা ৯ জনের পরিবর্তে ১১ জন হবে। আর কাউন্সিলের মহাপরিচালক সদস্যসচিব হিসেবে কাজ করবেন।

এই কাউন্সিলের উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের ফোর্স কমান্ডার, সাব সেক্টর কমান্ডার অথবা কমান্ডারসমূহের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, এই বিষয়ক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তি বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আইনের খসড়ার তথ্য বলতে গিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে গেজেটভুক্ত ও সনদপ্রাপ্ত হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব কাউন্সিলের কাছে দেওয়া হয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্য হিসেবে কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল বা আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে বা খুন, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগসহ অন্যান্য অপরাধ করেছে, তাদের তালিকা বা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, তাদের তালিকা প্রণয়ন এবং গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে এই কাউন্সিলের কাজ।

এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব স্তরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করাও হবে এই কাউন্সিলের কাজ।

২০১৯ সালে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধনের খসড়া তৈরি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ওই বছর ২৯ ডিসেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সুপারিশও নেওয়া হয়। ২০২০ সালের মার্চ মাসে আইনের ভাষা পরিমার্জনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষে পাঠানো হয়।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুটি সংশোধনী দিয়ে ওই খসড়ার নীতিগত অনুমোদন করা হয়। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা গত জুনে মন্ত্রিপরিষদ সভায় পাঠানো হয়।

এটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী এখন জাতীয় সংসদে পাসের জন্য তোলা হবে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension